রাশিয়ার সুদূর পূর্বে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) যাত্রীবাহী একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়ে সেটিতে থাকা ৪৯ জন আরোহীর সবাই নিহত হয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। জরুরি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। এর মধ্যেই জানা গেছে, বিধ্বস্ত বিমানটি ৫০ বছরেরও বেশি পুরনো ছিল।
সংবাদমাধ্যম দ্য মস্কো টাইমস জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ১টার দিকে আমুর অঞ্চলের টিন্ডা শহরে বিমানবন্দর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় আঙ্গারা এয়ারলাইন্সের বিমানটির সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
বিমানটি খবরোভস্ক থেকে যাত্রা শুরু করে, ব্লাগোভেশচেনস্কে থেমেছিল এবং এরপর টিন্ডা যাচ্ছিল। বিমানটির আরোহীদের মধ্যে ছয়জন ছিলেন ক্রু সদস্য।
জরুরি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাডার থেকে ‘অদৃশ্য’ হওয়ার আগে বিমানটি থেকে কোনো বিপদ সংকেত জারি বা কোনো কারিগরি সমস্যার কথাও জানানো হয়নি।
উদ্ধারকারী দলগুলো পরে ৩০ হাজারেরও কম জনসংখ্যার শহর টিন্ডা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার (১০ মাইল) দূরে বিমানটির পুড়ে যাওয়া ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়।
প্রকাশে অনিচ্ছুক জরুরি পরিষেবার একজন কর্মকর্তা রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাস-কে জানিয়েছেন, প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, বিমানের সব আরোহী নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনাস্থলে অবতরণ করতে পারেনি – কারণ এটি একটি দুর্গম, পাহাড়ি এলাকা। সেখানে এখনো আগুন জ্বলছে।
স্থানীয় জরুরি পরিষেবা মন্ত্রণালয়ের বরাতে সংবাদ সংস্থা সিএনএন জানিয়েছে, সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা পরিচালিত এএন-২৪ মডেলের বিমানটি গন্তব্যে পৌঁছানোর ঠিক আগে রাডার থেকে হারিয়ে যায়। বিমানটি যখন নিখোঁজ হয়, তখন সেটি তিনদা শহরের খুব কাছাকাছি অবস্থানে ছিল।
সাইবেরিয়াভিত্তিক বিমান সংস্থা আঙ্গারা পরিচালিত এএন-২৪ মডেলের এ বিমানটি প্রায় ৫০ বছরের পুরনো। এটি চীন-রাশিয়া সীমান্তের শহর ব্লাগোভেশচেনস্ক থেকে আমুর অঞ্চলের প্রত্যন্ত শহর তিনদা-র উদ্দেশে যাত্রা করেছিল।
প্রথমে স্থানীয় জরুরি বিভাগ জানিয়েছিল, বিমানে প্রায় ৪০ জন আরোহী ছিলেন। তবে আমুর অঞ্চলের গভর্নর ভাসিলি অরলভ নিশ্চিত করেন, এটি ৪৯ জনের একটি ফ্লাইট ছিল। যার মধ্যে ৫ জন শিশু এবং ৬ জন ক্রু সদস্য রয়েছেন।
তাস বলছে, দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ ছিল খারাপ আবহাওয়ায় ল্যান্ডিংয়ের সময় ত্রুটি। পরবর্তীতে এমআই-৮ নামে উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার বিমানটির জ্বলন্ত ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পায়।
উদ্ধারকারী দল এখন দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছেন জরুরি বিভাগের কর্মকর্তা ইউলিয়া পেতিনা।
রাশিয়ার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ইতোমধ্যেই ঘটনাস্থলে তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, প্রযুক্তিগত ত্রুটি ও খারাপ আবহাওয়ার সম্মিলিত প্রভাব এই দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
0 Comments